সময়ের সংলাপঃ রমজান কীভাবে কাটালেন?
মাহতাবুর রহমানঃ আপনারা সবাই জানেন, বিগত দুই বছর মহামারি করোনাভাইরাসের কারণে স্তব্ধ ছিল গোটা বিশ্ব। যেই কারণে মুসলমানদের সবচেয়ে বড় এই ধর্মীয় উৎসব যথাযথ আয়োজনে উদযাপন করা সম্ভব হয়নি। কিন্তু আল্লাহ তা’আলার অশেষ রহমতে এই রমজানের মধ্যদিয়ে সবকিছু স্বাভাবিক হতে শুরু করেছে। বিশেষ করে মক্কা মদিনাসহ পৃথিবীর সব জায়গার মসজিদগুলো খুলে দেয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে সমবেত সারিতে নামাজ পড়া সম্ভব হচ্ছে। এই কারণে সবাই খুশি মনে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে এবারের রমজান পালন করতে পেরেছে। তাই আশা করা যায় এবার ঈদ উদযাপনের মধ্যদিয়ে দুই বছরের আনন্দ উৎসবের ঘাটতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। সে লক্ষ্যেই সবাই প্রস্তুতি নিচ্ছে, আমরাও প্রস্তুত হচ্ছি।
সময়ের সংলাপঃ আপনার প্রতিষ্ঠানে ঈদের প্রস্তুতি কেমন?
মাহতাবুর রহমানঃ রমজানের শুরুতে আমার প্রতিষ্ঠানে যত কর্মী রয়েছে সবার পুরো মাসের খাবার একবারে দিয়ে দিয়েছি। ২৩ রমজান (২৪ এপ্রিল) সংযুক্ত আরব আমিরাতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি ও আমিরাতি নাগরিকদের সম্মানে আমার ফ্যাক্টরিতে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছি৷ সেখানেও আমি চেষ্টা করছি সকল বাংলাদেশি প্রবাসী, আমার প্রতিষ্ঠানের কর্মী, শ্রমিক ভাইদের একসঙ্গে মিলিত করার। এছাড়াও আরব আমিরাতসহ বিশ্বের যেখানে আমার প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম রয়েছে সব জায়গায় ঘোষণা দিয়েছি যতদ্রুত সম্ভব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-বোনাস প্রদান করতে হবে। যাতে করে তারা ঈদের আগেই বেতন ও বোনাস হাতে পায়। এতে তারা সুন্দরভাবে আনন্দ করে ঈদ উদযাপন করতে পারবে। সেই সঙ্গে ঈদ উপলক্ষে যাদের ছুটির প্রয়োজন আছে তাদের ছুটি নিশ্চিত করছি। যাদের ছুটির প্রয়োজন নেই তারাও আগ্রহ দেখালে ছুটি দিয়ে দিচ্ছি। কারণ বিগত দুটি বছর অনেকেই পরিবারের সঙ্গে ঈদ পালন করতে পারেনি৷ এবার যেহেতু পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে তাই সবার ছুটি নিশ্চিত করে পরিবারের সঙ্গে আনন্দে সামিল হবার সুযোগ করে দিয়েছি।
সময়ের সংলাপঃ দেশে ও প্রবাসে, ঈদ উদযাপনে পার্থক্য কী?
মাহতাবুর রহমানঃ নিজ দেশের মাটির স্বাদ পৃথিবীর আর কোথাও পাওয়া যাবে না। দেশে ঈদ উদযাপনে সবার মধ্যে যে আন্তরিকতা, সৌহার্দ্য আর সম্প্রীতির মিলন ঘটে তা প্রবাসে সম্ভব না। সেখানে বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, পাড়া-প্রতিবেশী একে অপরের বাড়িতে আসে, দেখা করে। সেটার আনন্দ বিদেশে পাওয়া যাবে না। আমরা প্রবাসে বসবাস করি, এখানে ভারত, পাকিস্তান, ইউরোপ, আমেরিকাসহ বিভিন্ন দেশের মানুষ বসবাস করে। বিশেষ করে সংযুক্ত আরব আমিরাতে ২০০টিরও বেশি দেশের মানুষের বসবাস। এত সংখ্যক দেশ আর সেসব মানুষের সঙ্গে তো নিজ দেশের ঈদ উদযাপনের মিল হবে না। তাই আমরা চেষ্টা করি নিজ দেশে পরিবার পরিজন নিয়ে ঈদ উদযাপন করার। সেখানেই পাওয়া যায় প্রকৃত সুখ, শান্তি ও অনাবিল আনন্দ।