রবিবার, ১৩ অক্টোবর ২০২৪, ২৮ আশ্বিন ১৪৩১

ইফতারের ভিন্ন আয়োজন কানাডায় প্রবাসীদের জন্য

প্রকাশ: ১১ এপ্রিল ২০২২ | ২:১৪ অপরাহ্ণ আপডেট: ১১ এপ্রিল ২০২২ | ২:১৪ অপরাহ্ণ
ইফতারের ভিন্ন আয়োজন কানাডায় প্রবাসীদের জন্য

মাল্টিকালচারালিজমের দেশ কানাডায় বিভিন্ন দেশের লোক স্থায়ীভাবে বসবাস করছে। এর মধ্যে প্রচুর সংখ্যক মুসলমানও রয়েছেন। দেশটিতে গত দুই বছরের তুলনায় এবার ইফতারের ব্যাপক আয়োজন লক্ষ্য করা গেছে। কানাডার আলবার্টায় করোনা পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় সামাজিক দূরত্ব ও মাস্ক ব্যবহারের ওপর বাধ্যতামূলক শিথিল করায় পুরো আলবার্টা যেন নতুন করে জেগে উঠেছে। শুধু আলবার্টা নয়, এ চিত্র এখন পুরো কানাডার।

এরই মধ্যে মসজিদ, মন্দির ও গির্জাসহ ধর্মীয় উপসানালয় গুলোতে প্রচুর সংখ্যক লোকের সমাগম ঘটেছে।

দীর্ঘদিনের না দেখে থাকার বিরতি বিচ্যুতি ঘটাতে পারেনি পারস্পরিক সম্পর্কের। একে অপরের সান্নিধ্যে এগিয়ে আসছে বিনিময় করছেন কুশলাদি।

এদিকে, ক্যালগেরির গ্রোসারির দোকানগুলোতে প্রবেশপথেই ইফতারের জন্য বিভিন্ন ধরনের খাবার, জুস, ছোলা বেসনসহ নানা দেশের খাবার সমৃদ্ধি প্রস্তুতি দেখা গেছে।

বরফাচ্ছন্ন কানাডার প্রায় ৮ মাসই বরফে আচ্ছাদিত থাকে। এ বছরও এর ব্যত্যয় ঘটেনি। কখনো কখনো প্রচণ্ড বৈরি আবহাওয়ায় ম্লান করতে পারেনি প্রবাসী বাঙালিদের ইফতারের প্রস্তুতি। রমজান মাসে বাংলাদেশের মতো এখানেও বাঙালিরা ছোলা মুড়ি মেখে মুয়াজ্জিনের আজানের ধ্বনির অপেক্ষায় থাকে।

ইফতারের আয়োজনে থাকে পেঁয়াজি, কলা, আলুর চপ, জিলাপি, খেজুর, চিকেন হালিম আর শরবত। বিশেষ খাবার হিসেবে কমলা, আঙুর, আপেলসহ নানা দেশের বৈচিত্র্যময় ফল। বাংলাদেশি হোটেলগুলোতেও ইফতারিসহ খিচুড়ি ও বিরিয়ানির বেচাকেনা চলে জমজমাটভাবে।

এ বছর মুসুল্লিরা সবাই মসজিদে বসে একসাথে ইফতারি করছেন। মসজিদ কমিটির অনেকেই ইফতারির জন্য অর্থ সংগ্রহ করেছেন।

প্রবাস জীবনের যান্ত্রিকতাময় দিনগুলোতে ইফতার আর তারাবি নামাজ শেষে ক্যালগেরির বাংলাদেশি অধ্যুষিত এশিয়ান এলাকায় উৎসব মুখর পরিবেশে সবাই যখন মিলিত হয়, তখন মনে হয় যেন একখণ্ড বাংলাদেশ।

কানাডার টরেন্টো প্রবাসী বাঙালি এ আলী তালুকদার জানান, গত দু’বছর বন্দি থাকার এবার বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের নিয়ে ইফতার করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে। মহান রাব্বুল আলামীন পবিত্র রমজান মাসে সারা বিশ্বের উম্মাহর যেন হেদায়েত দান করেন। আগের মতো রমজান পালন করার তৌফিক দান করেন।

ক্যালগেরির উৎসব সুইটস অ্যান্ড রেস্টুরেন্টের স্বত্বাধিকারী ইরফান আরিফ জানান, আমাদের রেস্টুরেন্টে ইফতার আইটেমসহ সব ধরণের আইটেম রয়েছে। রমজান মাসে ক্রেতাদের সর্বোচ্চ সেবা দিতে আমরা সবচেয়ে গুরুত্ব দিচ্ছি। যেন সবাই সুন্দরভাবে ইফতার করতে পারে।

ক্যালগেরির ‘বারাকা এ্যপায়ারেল’র স্বত্বাধিকারী আরিফা রব্বানি বলেন, আমরা ইফতারিতে বাংলাদেশের স্টাইলে শাহী হালিম, শাহী জিলাপি, বেগুনি, পিয়াজু, আলুর চপ, ছোলাসহ বাহারি রকমের ফল ও শরবতের ব্যবস্থা রাখি। পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সবাই মিলে যখন ইফতারি করি তখন বাবা-মাসহ শৈশবের সেই ইফতারির দিন গুলোকে খুব মিস করি।

সিয়াম সাধনার মাসে সংযম আর আত্মশুদ্ধির মধ্য দিয়ে যাবতীয় ভোগ-বিলাস, অন্যায়, অপরাধ, হিংসা, বিদ্বেষ, সংঘাত পরিহার করে ব্যক্তিগত ও সমাজ জীবনে বয়ে নিয়ে আসবে শান্তির বার্তা কানাডায় বসবাসরত প্রবাসী বাঙালিদের এমনটাই প্রত্যাশা।

সম্পর্কিত পোস্ট