নানা অনিয়ম আর মালিক-শ্রমিকের মধ্যে শর্ত রক্ষা না করার কারণে যেকোনো সময় বাংলাদেশ ইতালির মাল্টায় শ্রমবাজার হারাতে পারে। বৈধভাবে দেশটিতে যাওয়ার পথ বন্ধ হলে ইউরোপে বাংলাদেশিদের প্রবেশ কঠিন হয়ে পড়বে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ থেকে আসা নতুন শ্রমিকরা মাল্টা সরকারের নিয়ম সঠিকভাবে মানছেন না। ফলে এ শ্রমবাজারটি মারাত্মক হুমকির সম্মুখীন রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় অনেক বাংলাদেশি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
প্রসঙ্গত, কোনো শ্রমিক বৈধভাবে আসতে চাইলে স্থানীয় মালিকের সাথে একটি কাজের চুক্তি নিশ্চিত করতে হয়। পরে মাল্টা থেকে একটি অনুমতিপত্র নিয়ে সেই কাগজপত্র মাল্টা দূতাবাসে জমা দিতে হয়। এরপর সব ঠিক থাকলে ভিসা দেওয়া হয়। ভারতের নয়াদিল্লিতে মাল্টার দূতাবাস।
স্থানীয় সূত্রে আরও জানা গেছে, কোনো বাংলাদেশি মাল্টা এসে থাকছেন না। মাল্টা কোনোভাবে আসতে পারলে তারা ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান। ফলে মাল্টা কোম্পানির মালিকপক্ষের সাথে যে চুক্তি তা ভঙ্গ করছেন তারা। যে কারণে মালিকপক্ষ অনেকটা আস্থা হারিয়ে ফেলছেন বাংলাদেশি শ্রমিকদের প্রতি। পাশাপাশি শ্রমিক সংকটে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বিভিন্ন কোম্পানি। বাংলাদেশি শ্রমিকরা মাল্টাকে এক প্রকার ট্রানজিট হিসেবে ব্যবহার করছেন। মাল্টা আসার পর এসব শ্রমিকরা ফ্রান্স, ইতালি, পর্তুগাল, স্পেনসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশে পাড়ি জমান। এভাবে চলতে থাকলে মাল্টার এই শ্রমবাজার খুবই ঝুঁকির মুখে পড়বে।
এ ব্যাপারে গ্রিসে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রধান মো. খালেদ বলেন, ইউরোপের মধ্যে একটি ভালো শ্রমবাজার হলো মাল্টা। বেতনও ভালো। গত কয়েক বছরে মাল্টা সরকার প্রায় ছয় থেকে সাত হাজার ভিসা দিয়েছে বাংলাদেশি শ্রমিকদের। এর মধ্যে প্রায় চার হাজার শ্রমিক ইউরোপের অন্য দেশে চলে গেছে। তারা কয়েক মাস কাজ করে এরপর চলে যায় অন্য দেশে। এতে দেশের ভাবমূর্তিও ক্ষুণ্ন হয়।
এ বিষয়ে মাল্টা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী কাউসার আমিন হাওলাদার বলেন, গ্রিস দূতাবাসের সাবেক রাষ্ট্রদূত জসিম উদ্দিন ও বর্তমান কাউন্সিলর মো. খালেদ মাল্টা শ্রমবাজার ধরে রাখতে যথেষ্ট চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি বিভিন্ন উপায়ে শ্রমিক এনে অন্যত্রে পাঠিয়ে মাল্টার শ্রমবাজারটি ধ্বংস করার পায়তারা করছেন। এটা বন্ধ না হলে বাংলাদেশ ব্লাকলিস্টে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সংলাপ-১৪/০৩/০০৭/আ/আ