শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

আফগান-পাক মহাসড়ক অবরোধের সিদ্ধান্ত জিরগার

প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২২ | ৮:১৩ অপরাহ্ণ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২২ | ৮:১৩ অপরাহ্ণ
আফগান-পাক মহাসড়ক অবরোধের সিদ্ধান্ত জিরগার

জনগণের সম্মতি ছাড়াই খাইবার-পাখতুনখোয়ার (কেপি) সঙ্গে কেন্দ্রশাসিত আদিবাসী অঞ্চলকে (এফএটিএ) একত্রীকরণ করা হয়েছে। এর ‍প্রতিবাদে জামরুদ বাইপাসে আফগানিস্তান-পাকিস্তান মহাসড়ক অবরোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্থানীয় নেতাদের সংগঠন জিরগা।

পাকিস্তানের স্থানীয় সংবাদমাধ্যম আইনে বলা হয়েছে, খাইবার-পাখতুনখোয়ায় এফএটিএকে সংযুক্তিকরণের বিরুদ্ধে জামরুদ বাইপাসের কাছে এরই মধ্যে শুরু হওয়া প্রতিবাদ কর্মসূচি চলছে।

জিরগা সম্প্রদায়ের আফরসায়েব আফ্রিদি ও শের বাহাদুর আফ্রিদি জানান, এফএটিএ একীভূতকরণ হলো এ অঞ্চলের প্রাকৃতিক সম্পদ দখলের ষড়যন্ত্র; যা অগ্রহণযোগ্য। এ ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে এফএটিএর জনগণকে দাসে পরিণত করা হয়েছে, যা আমরা কখনো মানব না।

পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, তাদের দাবি, অবৈধ কর প্রত্যাহার করা, জাতীয় সংসদ ও প্রাদেশিক সংসদের আসন সংখ্যা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা, আদিবাসী সংস্কৃতি ও মূল্যবোধ পুনরুদ্ধার করা; অন্যথায় এফএটিএকে আলাদা প্রদেশ করতে হবে।

খবরে বলা হয়েছে, খাইবার-পাখতুনখোয়ার সঙ্গে একীভূত হওয়ার পর থেকে এফএটিএর জনগণ বহু সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। একীভূত হওয়ার তিন বছর পরেও আদিবাসীরা মোটেও খুশি নন। এ ছাড়া সরকারের নেওয়া ব্যবস্থা ও নীতিতে তারা সন্তুষ্ট নন। কারণ তাদের সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।

অনেক আদিবাসী তাদের সমস্যা নিষ্পত্তির জন্য বিচার বিভাগের চেয়ে জিরগা পছন্দ করেন। খাইবার-পাখতুনখোয়ার সঙ্গে এফএটিএর একীকরণের বিরুদ্ধে এই পরিস্থিতিতে মানুষ সক্রিয় হচ্ছে এবং আদিবাসীদের বোঝানোর চেষ্টা করছে যে একত্রীকরণ ভুল ছিল এবং যার ফলাফল সামনে রয়েছে।

আদিবাসী ব্যবস্থায় জনগণকে তাত্ক্ষণিক এবং সময়োপযোগী ন্যায়বিচার দিয়ে সব সিদ্ধান্ত স্থানীয় রীতিনীতি এবং অনুশীলন অনুসারে নেওয়া হতো। লক্ষণীয়, এই সিদ্ধান্তগুলো সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কাছে সানন্দে গ্রহণীয় ছিল।

স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে বলা হয়েছে, একীভূতকরণের আগে এফএটিএর জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি সরকার ভুলে গেছে এবং যারা এই একত্রীকরণের কৃতিত্ব নিতেন তারা এখন নীরব।

এফএটিএর সাবেক বিশেষ বাহিনীর একজন কর্মকর্তা ২২টি পয়েন্ট তুলে ধরে অভিযোগ করেন, সরকার তার প্রতিশ্রুতি পূরণ করেনি। সরকারকে আদিবাসী জনগণের সমস্যা সমাধানের জন্য উন্নয়নমূলক তহবিল ব্যয় করে একীভূতকরণের সব সুবিধা পূরণ করা উচিত।

দেশটিতে শিক্ষিত এবং রাজনৈতিকভাবে সক্রিয়রা ভেবেছিলেন, একীভূতকরণ তাদের জাতীয় স্রোতে নিয়ে আসবে। কিন্তু আপাতত তা ভুল প্রমাণিত হয়েছে।

২০১৮ সালের ২১ মে আদিবাসী অঞ্চলগুলোকে সংস্কার করতে এবং সাংবিধানিক এখতিয়ারের মধ্যে আনতে পাকিস্তান ২৫তম সংশোধনীর অধীনে এফএটিএকে খাইবার-পাখতুনখোয়ার অংশ করে। কিন্তু সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে এটি উন্নয়নের পথে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

নয়া দৌরের ফ্রাইডে টাইমসে এক প্রতিবেদনে ফ্রিল্যান্স সাংবাদিক রিফাতুল্লাহ ওরাকজাই লিখেছেন, পাকিস্তানের সংবিধানের অধীনে মূলধারায় যুক্ত হওয়া সত্ত্বেও সাবেক এফএটিএ এখনো অরাজকতায় নিমজ্জিত। সন্ত্রাসী সংগঠনের তৈরি করা শূন্যতা এখনো মাঝেমধ্যে বিপত্তি ঘটায়। এর ফলে নেওয়া কঠোর নীতির কারণে স্থানীয়রা বিরক্ত।

বাজাউর জেলার একজন স্থানীয় সাংবাদিক সাহেবজাদা বাহাউদ্দিন বলেন, খাইবার-পাখতুনখোয়ার সঙ্গে এফএটিএর একত্রীকরণের আগে এবং পরবর্তী ব্যবস্থাগুলোকে সংযোজন না করে উপায় নেই।

বাহাউদ্দিন নয়া দৌরের সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘জিরগা পদ্ধতি তুলনামূলক ভালো ছিল। এতে অর্থ ব্যয় হলেও অন্তত তাৎক্ষণিকভাবে ন্যায়বিচার দেওয়া হত।’

তিনি বলেন, সরকার আদিবাসীদের প্রতি যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তা পূরণ হয়নি, তাই এলাকাবাসী হতাশ। অনেকে মনে করেন আগের পদ্ধতি সস্তা এবং দ্রুত ছিল।

সূত্র : এএনআই

সম্পর্কিত পোস্ট