মরুরবুকে কমলালেবু চাষ করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন পেরুর চাষি বাস্কো মাসিয়াস। মুরগির বিষ্ঠা ও পোড়া ভুট্টার মতো উপাদান দিয়ে সার তৈরি করে তিনি লাভবান হচ্ছেন।
ডয়েচে ভেলের প্রতিবেদনে বলা হয়, পেরুর চিনচা আলতা এলাকা অত্যন্ত শুকনা ও রুক্ষ। বৃষ্টিপাত প্রায় হয় না বললেই চলে।
চাষবাসের জন্য একেবারেই উপযুক্ত নয়। তা সত্ত্বেও সেখানে সবুজ প্লান্টেশন গড়ে উঠেছে।
প্রায় ৩০ বর্গ কিলোমিটার জুড়ে কমলালেবুর গাছ শোভা পাচ্ছে।
গ্রুপো আলিমেন্তা গোষ্ঠীর প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বাস্কো মাসিয়াস বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েক বছর ধরে মরুভূমিতে চাষবাস করছি।
লোকে প্রথমে আমাদের পাগল ভেবেছিল, কারণ সাধারণত মানুষ উর্বর জমিতেই চাষাবাদ করে। অথচ আজ আমরা মরুভূমিতেই রেকর্ড পরিমাণ কমলালেবু ফলাচ্ছি। ’
মরুভূমির মাটি উর্বর করে তুলতে প্রয়োজন হয় মুরগির। প্রায় ৬০ লাখ মুরগি সেই কাজ করছে। প্রথমদিকে বাস্কো মাসিয়াস শুধু মুরগির ডিম বিক্রি করতে চেয়েছিলেন।
তবে বিপুল পরিমাণ মুরগির বিষ্ঠা নিয়ে তিনি প্রথমে সমস্যায় পড়েছিলেন। এখন তিনি সেই বিষ্ঠাকে সারে রূপান্তরিত করে কাজে লাগাচ্ছেন। মুরগির খোরাকের অবশিষ্ট অংশও সেই সারে ব্যবহার করা হয়। ভুট্টা খেলেও মুরগিরা খোরাকের ব্যাপারে বেশ খুঁতখুঁতে।
বাস্কো মাসিয়াস বলেন, ‘এটাই ভুট্টার অবশিষ্ট অংশ। আগে আমরা এগুলো পুড়িয়ে ফেলতাম বা ফেলে দিতাম। এখন আমরা সেটা ঝলসে উদ্ভিদভিত্তিক সারের উপাদান করতে শিখেছি। সারের মৌলিক উপাদান হিসেবেও সেটি ব্যবহার করা হচ্ছে। ’
বাস্কো মাসিয়াস বহু শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য অনুযায়ী বিশেষ প্রক্রিয়ায় ভুট্টার মোচা ঝলসে নেন। ফলে অনেক পুষ্টি অক্ষত থাকে। গাছ পরে ধীরে ধীরে সেই পুষ্টি শুষে নিতে পারে।
পোড়া ভুট্টা, মুরগির বিষ্ঠা ও কয়েকটি অন্য উপাদান দিয়ে সার তৈরি হয়। মাসিয়াস তার কিছু অংশ বিক্রি করেন, বাকিটা কমলালেবু গাছের গোড়ায় দিয়ে দেন। গোটা প্রক্রিয়াকে বৃত্তাকার অর্থনীতি বলা হয়।
বাস্কো বলেন, ‘বৃত্তাকার অর্থনীতির মাধ্যমে আমরা সবকিছুর মধ্যে দক্ষতা আনতে পারি। ঘটনা হলো, এর কোনোটাই নতুন নয়, প্রকৃতি এভাবেই কাজ করে। ’