মার্কিন কংগ্রেসে প্রভাবশালী সদস্য কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং নিউইয়র্কে পেশাজীবী সাংবাদিকদের এক ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, করোনা রিলিফ ফান্ডের হিস্যা বাংলাদেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ীরাও যথাযথভাবে পাবার ক্ষেত্রে অবিস্মরণীয় ভূমিকা পালন করেছেন বাংলা ভাষার গণমাধ্যমগুলো। তার ফলে আমার কংগ্রেসনাল ডিস্ট্রিক্ট (নিউইয়র্ক-৬) এর সকল রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী, গ্রোসারি ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পরিমাণের মঞ্জুরি ড্র করেছেন। এজন্যে কৃতিত্ব দাবি করতে পারে কমিউনিটিভিত্তিক ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতারা। পাশাপাশি অভিবাসী সমাজের অধিকার আদায়ে নিবেদিত বাংলাদেশীসহ কম্যুনিটিভিত্তিক মিডিয়াগুলোর কৃতিত্ব অপরিসীম। অথচ এখন পর্যন্ত সিটি, স্টেট কিংবা ফেডারেল প্রদত্ত বিজ্ঞাপণ ঠিকমত পাচ্ছে না। বাংলাদেশি মিডিয়াগুলোকে সামাণ্যই বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে এখাতে।
প্রথম এশিয়ান আমেরিকান নারী কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং আরো বলেন, বলতে দ্বিধা নেই যে, এখানে যে সব সাংবাদিক এসেছেন, তারা কিন্তু আমাদের মত বাসায় ফিরবেন না। সরাসরি অফিসে গিয়ে এই অনুষ্ঠানের সংবাদটি তৈরী করবেন নিজ নিজ গণমাধ্যমের জন্য। এজন্যে আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদেরকে শ্রদ্ধা জানাচ্ছি। গ্রেস মেং বাস্তবতার আলোকে কঠোর পরিশ্রমী সাংবাদিকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে আরো বলেন, সামনের নির্বাচনে যারা কংগ্রেস অথবা স্টেট কিংবা সিটিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান বা ইতিমধ্যেই অবতীর্ণ হয়েছেন, তাদের সংবাদটিও সারা আমেরিকায় কমিউনিটির মধ্যে প্রচার করতে তারাই একমাত্র অবলম্বন।
অভিবাসী সমাজের সুখ-দুঃখের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িয়ে থাকা এই জনপ্রতিনিধি আরো বলেন, আমরা সকলেই জানি যে, অনেক সময়ই মূলধারার গণমাধ্যমে খেঁটে খাওয়া মানুষদের প্রকৃত তথ্য উপস্থাপিত হয় না। সে দায়িত্বটি পালন করেন কম্যুনিটিভিত্তিক সাংবাদিকরা।
সোমবার গুলশান প্যালেসে ‘আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাব’ (এবিপিসি)’র এ মাহফিলে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে নিউইয়র্কে বাংলাদেশের কন্সাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলাম সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বাংলাদেশের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে কংগ্রেসওম্যানকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্ক আরো জোরদারকল্পে তার নিরন্তর প্রয়াসের জন্যে।
মূলধারার রাজনীতিতে কম্যুনিটির পথিকৃত ডেমক্র্যাট মোর্শেদ আলম, কুইন্স ডিস্ট্রিক্ট লিডার এ্যাট লার্জ অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী, বাংলাদেশ সোসাইটির সাবেক সভাপতি ডা. ওয়াদূদ ভূইয়া প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
সংক্ষিপ্ত এ আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, এবিপিসির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ এবং সঞ্চালনা করেন এবিপিসির সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার এবং যুগ্ম সম্পাদক শাহ ফারুক।
বিশেষ অতিথি হিসেবে মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূতের বিশেষ প্রতিনিধি ফার্স্ট সেক্রেটারি (প্রেস) নূর এলাহি মিনা, ডেপুটি কন্সাল জেনারেল এসএম নাজমুল হাসান এবং ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার অ্যাটর্নি মঈন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা একুশে পদকপ্রাপ্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী রথীন্দ্র নাথ রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী শহীদ হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল বাশার চুন্নু, বীর মুক্তিযোদ্ধা এনামুল হক, বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদুল ইসলাম, বীর মুক্তিযোদ্ধা শামসুল আলম চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফিরোজ পাটোয়ারি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ফেরদৌস, বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ হাসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা হাজী আব্দুর রহমান প্রমুখ।
এছাড়াও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান, ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদ, বাংলাদেশ সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রহিম হাওলাদার এবং সেক্রেটারি রুহুল আমিন সিদ্দিকীসহ সাবেক ৬ জন সভাপতি এবং ৬ জন সাধারণ সম্পাদক। ছিলেন জালালাবাদ এসোসিয়েশনের প্রধান নির্বাচন কমিশনার আতাউর রহমান সেলিম-সহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলামনাই এসোসিয়েশনের বেশ কয়েক কর্মকর্তা, সোনালী এক্সচেঞ্জ ইনকের সিইও দেবশ্রী মিত্র এবং লং আইল্যান্ডের একটি আসন থেকে কংগ্রেস প্রার্থী ড. মুজিবুল হক, শহীদ পরিবারের সন্তান ফাহিম রেজা নূর এবং ডা. মাসুদুল হাসান, জনপ্রিয় কন্ঠশিল্পী শাহ মাহবুব, সবিতা দাস।
কম্যুনিটি বোর্ড মেম্বার ওসমান চৌধুরী, শেখ শাহজাহান, আহসান হাবিব ছাড়াও ছিলেন ডেমক্র্যাটিক পার্টির ডিস্ট্রিক্ট লিডার প্রার্থী মাজেদা এ উদ্দিন, ড্রামের নির্বাহী পরিচালক ফাহাদ আহমেদ এবং কম্যুনিটি অর্গানাইজার ফৌজিয়া কাজী, প্রবাসের শক্তিমান কবি ফকির ইলিয়াস, তুলি ইলিয়াস এবং মোশারফ হোসেন, এডভোকেট মজিবুর রহমান।
রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী নুরুল আজিম, সমিরুল ইসলাম বাবলু, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সেক্রেটারি সুব্রত তালুকদার, বিএনপি নেতা কাজী আজম, ফিরোজ আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র যুবদল নেতা এম এ বাতিন, জাসাসের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব আবু তাহের, সেক্রেটারি কাওসার আহমেদসহ বিএনপি-যুবদলের নেতারাও ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা সাখাওয়াত বিশ্বাস, সুবল দেবনাথ, সাংস্কৃতিক সংগঠক সবিতা দাস, উইলি নন্দি, শো-টাইম মিউজিকের কর্ণধার আলমগীর খান আলম, জ্যাকসন হাইটস বিজনেস এসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন ভূইয়া এবং সেক্রেটারি ফাহাদ সোলায়মান, ভাইস প্রেসিডেন্ট এম এ আজাদ, কামরুজ্জামান কামরুলও ছিলেন সহকর্মীগণের সাথে। বিশ্বের সেরা পুলিশ হিসেবে খ্যাত ‘নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টে’ কর্মরত বাংলাদেশীদের সংগঠন ‘বাপা’র ফার্স্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এরশাদুর সিদ্দিক এবং মিডিয়া লিয়াঁজু জামিল সরোয়ার জনিও ছিলেন সুধীজনের মধ্যে।
এবিপিসির নির্বাহী কমিটির সদস্য-কর্মকর্তা ছাড়াও ছিলেন ডজনখানে গণমাধ্যমের কর্মীরা। দোয়া-মুনাজাত পরিচালনা করেন মুফতি আনসারুল করিম আজহারী।
ইফতারের পর মাগরিবের নামাজ শেষে সকলে ডিনার গ্রহণ করেন সম্প্রীতির এক অনন্য বন্ধনে। ইফতারের আমেজে আগত অতিথিগণকে অভ্যর্থনা জানান এবিপিসির ভাইস প্রেসিডেন্ট তপন চৌধুরী, কোষাধ্যক্ষ জামান তপন, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিমউদ্দিন অভি, প্রচার সম্পাদক শহিদুল্লাহ কায়সার, নির্বাহী সদস্য কানু দত্ত, রাজুব ভৌমিক, আলিম খান আকাশ প্রমুখ।